তুমি কি এমন কিছু মানুষের সংস্পর্শে এসেছ যারা সবসময় তোমার এনার্জি শুষে নিচ্ছে?
তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কাটালেই তোমার মন খারাপ হয়ে যায়, আত্মবিশ্বাস কমে যায়, কিংবা তুমি নিজেকে ছোট মনে করতে শুরু করো?
যদি উত্তর “হ্যাঁ” হয়, তাহলে তুমি একা নও! নেতিবাচক মানুষ আমাদের চারপাশে সবসময়ই থাকে। কিন্তু সনাতন ধর্মে এমন কিছু সহজ ও কার্যকরী পদ্ধতি বলা আছে, যেগুলো তোমাকে এদের এড়াতে সাহায্য করবে – এবং সবচেয়ে ভালো ব্যাপার? এই উপায়গুলো একদম বাস্তবসম্মত এবং মজার!
তাহলে চলো, দেখে নিই সেই ৭টি অসাধারণ উপায়!
১. মনকে ‘শুদ্ধ’ রাখো – ভগবদ গীতার রহস্যময় শিক্ষা!
ভগবদ গীতায় (৬.৫) বলা হয়েছে:
“উদ্ধরেদ্ আত্মনাত্মানং নাত্মানমবসাদয়েত্।”
(নিজের মনকে উঁচুতে তুলে ধরো, কারণ নিজেই নিজের বন্ধু, আর নিজের সবচেয়ে বড় শত্রুও!)
নেতিবাচক মানুষের প্রভাব এড়াতে তোমার মন শক্ত রাখতে হবে! তাদের কথা শুনে ভেঙে পড়ার বদলে তুমি নিজেই নিজের শক্তি হও। প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিটের জন্য মেডিটেশন করো বা শ্লোক চর্চা করো – দেখবে মন অনেক শান্ত হবে!
২. দূরত্ব বজায় রাখো – ‘তিতিক্ষা’ অনুশীলন করো!
সনাতন ধর্মে তিতিক্ষা (ধৈর্যধারণ) অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, অপ্রয়োজনীয় ঝগড়া বা নেতিবাচক লোকেদের কথায় প্রভাবিত না হওয়া।
যখন কোনো নেগেটিভ মানুষ তোমার পাশে থাকে, তখন তার কথায় প্রভাবিত না হয়ে চুপচাপ দূরে সরে যাও। মনে রেখো, সব বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো দরকার নেই!
টিপস:
- গসিপিং থেকে দূরে থাকো
- অযথা বিতর্কে জড়িও না
- হাসিমুখে এড়িয়ে যাও – এতে তোমার মানসিক শান্তি অক্ষত থাকবে!
৩. ‘সৎসঙ্গ’ বেছে নাও – কার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছো সেটাই আসল!
উপনিষদে বলা হয়েছে:
“সৎসঙ্গে সর্বদা থাকো, নইলে তোমার চিন্তাও নষ্ট হবে!”
তুমি কাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটাচ্ছো? পজিটিভ ও ইনস্পায়ারিং মানুষদের সঙ্গে থাকলে তোমার আত্মবিশ্বাস বাড়বে!
তাহলে করণীয় কী?
- সনাতনী বই পড়ো (গীতা, রামায়ণ, মহাভারত)
- ভালো মনের বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাও
- এমন কিছু শেখো যা তোমার স্কিল বাড়াবে (যেমন যোগ, সংগীত, নৃত্য)
৪. ‘মানসিক শক্তি’ বাড়াও – হনুমানের শিক্ষা নাও!
যদি তুমি নেতিবাচক মানুষকে এড়াতে চাও, তাহলে নিজের ভিতরের শক্তিকে চিনতে শেখো! হনুমানজির গল্প শোনোনি? যখন তিনি নিজের শক্তি ভুলে গিয়েছিলেন, তখন জাম্ববন্ত তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি কতটা ক্ষমতাবান!
তুমিও তেমনই শক্তিশালী!
কেউ যদি তোমাকে খাটো করার চেষ্টা করে, মনে রেখো – তুমি কারও অনুমতি ছাড়াই দারুণ কিছু করতে পারো! শুধু আত্মবিশ্বাস ধরে রাখো!
৫. অহংকারী লোকদের সঙ্গে যুক্তিতর্কে যেও না – কৃষ্ণের শিক্ষা!
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন –
“মূর্খের সঙ্গে তর্ক করো না, তারা তোমাকে তাদের লেভেলে নামিয়ে আনবে এবং অভিজ্ঞতার কারণে জিতে যাবে!”
নেতিবাচক মানুষরা তোমাকে হেয় করতে চাইবে, তোমার এনার্জি শুষে নিতে চাইবে।
তাই তাদের সঙ্গে যুক্তিতে না গিয়ে একটি স্মার্ট হাসি দিয়ে বিষয়টা এড়িয়ে যাও!
মনে রেখো:
- তাদের কথায় বেশি গুরুত্ব দিও না
- চুপচাপ এগিয়ে যাও
- নিজের শক্তির প্রতি বিশ্বাস রাখো
৬. ভগবানের নাম স্মরণ করো – সুরক্ষা চক্র তৈরি করো!
নেতিবাচক শক্তি থেকে বাঁচার সবচেয়ে সহজ উপায় ভগবানের নাম জপ করা। সনাতন মতে, ভগবানের নাম একবার উচ্চারণ করলেই নেতিবাচক শক্তি দূর হয়ে যায়!
তুমি যা করতে পারো:
- প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট “ওম” বা গায়ত্রী মন্ত্র জপ করো
- রুদ্রাক্ষ বা তুলসী মালা পড়ো – এটি পজিটিভ শক্তি দেয়!
- যোগ ব্যায়াম করো – শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে!
৭. নিজের লক্ষ্যে ফোকাস করো – নেতিবাচক মানুষকে পাত্তা দিও না!
ভগবান রামের জীবন থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো – লক্ষ্য ঠিক থাকলে, কোনো কিছুই তোমাকে থামাতে পারবে না!
নেতিবাচক মানুষ সবসময়ই থাকবে – কিন্তু তুমি যদি তোমার লক্ষ্যে স্থির থাকো, তাহলে তাদের কথায় কিছু যায় আসে না! সফল মানুষরাই বেশি সমালোচিত হয়!
তাহলে করণীয়?
- অন্যের সমালোচনায় কান না দিয়ে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাও
- নেতিবাচক মানুষকে এড়িয়ে নিজের উন্নতির দিকে ফোকাস করো
- জীবনে শক্ত অবস্থান নাও – নিজেকে ছোট ভাবো না!